ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে কুতবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রুবায়েত ওয়াদুদ গল্প নামে ২০১৯ সালের এক এসএসসি পরিক্ষার্থী ও তার পরিবার ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ করেছে।
রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন এসএসসি পরিক্ষার্থী ও তার পরিবার।
পরিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগে বলেন, ২ফেব্রুয়ারী ২০১৯ যথাসময়ে বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুর জব্বার কলেজের পুরাতন ভবন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের এসএসসি পরিক্ষা। ওই ভবনের ১নং কক্ষে বাংলা প্রথমপত্র, যার কোড-১০১ এ পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ৩০নম্বরে এমসিকিউ, ৩০মিনিট সময়ে পরিক্ষার ১০মিনিট এর মাথায় পূর্ব আক্রোশের বশতবর্তী হয়ে ইউএনও আব্দুল কুদ্দুস মহোদয় কক্ষ পরিদর্শককে নির্দেশ দিয়ে অমার এমসিকিউ পরিক্ষার উত্তরপত্র নিয়ে যায়। পরবর্তী ১৫ মিনিট আমাকে বসিয়ে রাখেন, এতে এমসিকিউ ৩০ নম্বরে পাশ নম্বর-১০, এই অল্প সময়ের মধ্যে আমি বিষণ মানসিক চাপে ছিলাম এবং ভয়ে কিছুই লিখতে পারিনি, রচনা অংশেও একইরুপে ভয় আঙ্কতে সময় কাটে। ইউএনও পুর্বে থেকে আমার পরিবারকে হুমকি দামকি দিয়েছেন। সরকারের নিময় অনুযায়ী অমি পরিক্ষার কেন্দ্রে কোনমতেই অসদাচারন না করা সত্বেও কেবলমাত্র আক্রোশের বশবর্তী হয়ে তিনি আমার জীবনের এতো বড় সর্বনাশ করেছেন এবং বাকি পরিক্ষায় অংশ নিলে আমার জীবনের আরো বড় ধরনের ক্ষতি করবে। তাই আমি ভয় আর আতঙ্ক এবং ইউএনও কুদ্দুসের ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়ে চলমান পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই সংবাদ সম্মেলনে রুবায়েত অদুদ গল্প।
সংবাদ সম্মেলনে পরিক্ষার্থীর বাবা অভিযোগে বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কুদ্দুস আমার সন্তানের যে ক্ষতি করেছে তার বিচার চাই এবং প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট এর বিচার চাই। ওর জীবনের এখন কি হবে? এতো কষ্ট করে লেখা পড়া করিয়েছি আর শেষ বেলায় এসে ইউএনও এতো বড় জঘন্য কাজ করবে ভাবতেও পারিনি। সংবাদ সম্মেলনের পুর্বে সদয় অবগতি এবং বিচার চেয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক বরাবরে অনুলিপি পেশ করে রুবায়েত অদুদ গল্প ও তার পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, রুবায়েত অদুদ গল্প একজন মেধাবী ছাত্র। জেএসসি পরিক্ষায় জিপিএ ৪.৯৫, বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুতবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়া-শুনা করছে। ক্লাশেও রোল নম্বর-১, চিত্রাঙ্কন, কবিতা,আবৃত্তি, সঙ্গীতে খুব পারদর্শী। রুবায়েত অদুদ গল্পের বাবা সহাকারী শিক্ষক, মা একজন লেখক।
উল্লেখ্য, গত ১৭মার্চ-২০১৮ তারিখ বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জম্মদিন উপলক্ষে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে চিত্রাঙ্কন,আবৃত্তি, সংঙ্গীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিযোগিতায় উপজেলার ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেন। ওই প্রতিযোগিতায় মাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিচারক দায়িত্ব দেয়া হলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই পুরুস্কার পায়। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন কুতবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবায়েত অদুদ গল্প। প্রতিযোগিতায় বিচারকদের মনগড়া বিচার এবং নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পুরুস্কার দেয়া হয়। এতে বঞ্চিত হয় বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ওইদিন রুবায়েত গল্প ভাল কিছু করার পরও পুরুস্কার থেকে বঞ্চিত হয়। এই অপমানি সহ্যা করতে না পেরে এবং দুঃখ প্রকাশ করে রুবায়েত অদুদ গল্প তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে স্টাট্যাস দিয়েছিল- ওই স্টাট্যাসটিই কাল শত্রু হয়ে দাড়াঁয় বোরহানউদ্দিন উপজেলার ইউএনও আব্দুল কুদ্দুসের। স্টাট্যাসের নিচেই কমেন্টে ‘‘ইউএনও বোরহানউদ্দিন ভোলা’’ নামে ফেসবুক আইডি দিয়ে হমকি দেয়া হয়। যা মিনিটেই তীব্র নিন্দার ঝড় শুরু হয়। ইউএনও’র এমন হুমকি জণসাধারণের কাছে বিষের টুকরা হিসেবে পরিনত হয়।
এদিকে, তিনি ওই উপজেলায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সমালোচিত হয়। সাংবাদিককে অপমান, অফিসের স্টাফকে পিঠিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়, শিক্ষকদের মারধর। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে ওই উপজেলায়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থী রুবায়েত অদুদ গল্প’র জীবন এখন কোন পথে অগ্রসর?।
এবিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কুদ্দুসের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, তদন্তপুর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(আরজে,৩ফেব্রু-২০১৯ইং)