তাইফুর সরোয়ারঃ-
গতকাল সন্ধ্যার পর হঠাৎ খবর রটে যায়, বাংলাদেশের গুণী অভিনয়শিল্পী এ টি এম শামসুজ্জামান মারা গেছেন। ফেসবুকে অনেকে তাঁর ছবি দিয়ে প্রচার করেন খবরটি। খবরের সত্যতা নিশ্চত না হয়ে অনেকে তা শেয়ারও করেন। পরে এই অভিনেতার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ খবর মোটেও সত্য নয়। সুস্থ আছেন বরেণ্য এই অভিনেতা। তিনি স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া করছেন। বসা থেকে উঠতে পারছেন। কারও সহযোগিতা ছাড়াই চলাফেরা করছেন।
শুক্রবার রাতে এ টি এম শামসুজ্জামান ফোনে জানান, ‘মরিনি এখনো। এর আগেও ১০–১২ বার আমার মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছে। কেন যে এ রকম করে বুঝি না। আমার সঙ্গে কিসের শক্রতা, বুঝি না। আল্লাহ এদের হেদায়েত দান করুন।’
এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর হঠাৎ চারদিক থেকে ফোন আসা শুরু হয়। সবাই জানতে চাইছে, এ টি এম শামসুজ্জামান সাহেব কখন মারা গেছেন। আমরা রীতিমতো অবাক, দেশের এই দুর্যোগের সময় একটা জলজ্যান্ত মানুষকে এভাবে মেরে ফেলতে পারে!’
মাঝে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। মাঝে নানা দফায় পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গেল বছরের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহের এক রাতে বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এ টি এম শামসুজ্জামান। সেদিনও খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সেই রাতে তাঁকে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ টি এম শামসুজ্জামানের অন্ত্রে প্যাঁচ লেগেছিল। সেখান থেকে আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে খাবার, তরল, পাকস্থলীর অ্যাসিড বা গ্যাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং অন্ত্রের ওপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কিছু শারীরিক জটিলতা হয়। টানা ৫০ দিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ১৫ জুন তাঁকে শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কিছুদিন সেখানে ছিলেন। গেল বছর ঈদও কেটেছে হাসপাতালের কেবিনে। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবারও কয়েকবার তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি হলে তাঁরা আবার সুত্রাপুরের নিজ বাড়িতে আনা হয়। আজও তিনি বাড়িতে সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন।