জে এম ফিরোজ #
বিভিন্ন অজুহাতে মিলার পর্যায়ে চালের দাম বাড়ানোর বিষয়টি বহুল আলোচিত। সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৮ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। এর চাপ পড়ছে খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষের ওপর।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, দাম বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে মিলারদের কারসাজি। মিলার পর্যায়ে দাম বাড়ানোর ফলে স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। জানা যায়, রোববার মিল পর্যায়ে মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৫১ টাকায়। এ চাল খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগে মিল পর্যায়ে মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা কেজি দরে।
মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা মিল পর্যায়ে রোববার বিক্রি হয়েছে ৩৩ টাকা কেজি দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগে এ চাল মিল পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি দরে। রোববার খুচরা বাজারে এ চাল বিক্রি হয়েছে ৩৮ টাকা কেজি দরে।
চালসহ নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ বাড়লে সব শ্রেণীর মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। নির্বাচনের সময় একদিন পরিবহন চলাচল বন্ধ ছিল। সেদিন চাল সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। তখন সাময়িকভাবে চালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি যুক্তি ছিল। কিন্তু পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর কেন হঠাৎ চালের দাম বৃদ্ধি পেল, এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন ক্রেতারা। কেন হঠাৎ চালের বাজার অস্থির হল, এ প্রশ্নের জবাব কর্তৃপক্ষকে খুঁজে বের করতে হবে। চালের দাম যাতে আর না বাড়ে সেদিকেও তাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
বর্তমানে সীমিত ও নিুআয়ের মানুষ এমনিতেই পরিবারের সব ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। দরিদ্র পরিবারের অনেকে ঋণ করে ব্যয় মেটাতে বাধ্য হন। জানুয়ারি মাসে সন্তানের ভর্তিসহ বিভিন্ন খরচ মেটাতে এমনিতেই দরিদ্র পরিবারের কর্তা দিশেহারা হন।
এ অবস্থায় হঠাৎ যদি চালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে সীমিত ও দরিদ্র পরিবারে কী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় তা সহজেই অনুমান করা যায়। এ দুর্ভোগ দীর্ঘ সময় চললে এর অনিবার্য পরিণতি হিসেবে দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা পুষ্টিহীনতায় ভোগে, অনেক পরিবারের শিশুদের শিক্ষাজীবনের অবসান ঘটে। কাজেই চালসহ নিত্যপণ্যের বাজারে যেন অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে, এটাই কাম্য।