অনলাইন ডেস্ক।। গত সেপ্টেম্বরে হঠাৎ করেই পাকিস্তান সফর বাতিল করে দেশে ফিরে যায় নিউজিল্যান্ড। ‘হামলার হুমকি রয়েছে’ এমন অভিযোগ ছিল কিউইদের। নিউজিল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গন। এই ঘটনায় পুরো পাকিস্তান জুড়ে ওঠে সমালোচনার ঝড়। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ‘দেখে নেয়ার জন্য’ বাবর আজমদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রমিজ রাজা তখন স্পষ্ট করে বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি লক্ষ্য পাকিস্তানের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারানোর লক্ষ্য তো সব সময়ই থাকে। এর পাশাপাশি নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকেও হারাতে হবে। ভারতকে গুড়িয়ে দিয়ে যার শুরুটা আগের ম্যাচেই করেছিলেন বাবর আজমরা। কাল শারজায় নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বদলাটাও নিয়ে নিলো তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচেই জিতল পাকিস্তান। হারে শুরুটা ভালো হলো না নিউজিল্যান্ডের। দুবাইয়ে আগের ম্যাচে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তুলেছিল ভারত। পাকিস্তান ম্যাচটা জিতেছে ১০ উইকেটে। ব্যাটিং দাপট বলতে যা বোঝায় ওই ম্যাচে তারই প্রদর্শনী দেখিয়েছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। আগের ম্যাচের ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখে মনে হয়েছিলো নিউজিল্যান্ডের ১৩৫ রানের টার্গেট সহজেই টপকে যাবে পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সেই একই ধারা ও গতিতে এগোচ্ছিলেন দুজন। ৫.১ ওভারে বাবর আজম সাউদির বলে আউট হওয়ার আগে ওপেনিং জুটিতে এসেছে ২৮ রান। টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় বোলার হিসেবে শততম উইকেটের দেখা পান কিউই পেসার সাউদি। ১১তম ওভারে রিজওয়ান ইশ সোধির শিকার হওয়ার আগে করেছেন ৩৪ বলে ৩৩ রান। তখন একটু বিপাকেই পড়েছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের দুই সেরা (বাবর-রিজওয়ান) ব্যাটসম্যানের কেউ-ই যে তখন উইকেটে নেই। তখন জয়ের জন্য ৪৮ বলে ৬৫ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। শেষ ৬ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিলো ৫৪ রান। মোটামুটি সংগ্রহ নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে ১৫তম ওভার শেষ হওয়া পর্যন্তও ম্যাচে ছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু টিম সাউদির করা ১৭তম ওভারে আসিফের দুই ছক্কায় ম্যাচের পাল্লা হেলে পড়ে পাকিস্তানের দিকে। এরপর কাজটা সহজ হয়ে যায় পাকিস্তানের জন্য। শেষ পর্যন্ত আসিফ আলী ও শোয়েব মালিকে রক্ষা করেন দলকে। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের ২৩ বলে ৪৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। এদিন শারজাহ’য় আলোচিত এই ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করে কিউইরা। মার্টিন গাপটিল ও ড্যারেল মিচেলের উদ্বোধনী জুটিতে করেন ৩৬ রান। ২০ বলে ১৭ রান করে ফিরেন গাপটিল। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে জুটি গড়েন ড্যারেল মিচেল। সেই জুটি বেশিক্ষণ থিতু হতে দেননি ইমাদ ওয়াসিম। ২৭ রান করে ফিরেছেন এই ওপেনার। ২৫ রান করে অধিনায়ক উইলিয়ামসন রান আউটে কাটা পরলে বিপদ বাড়ে নিউজিল্যান্ড। এরপর ডেভন কনওয়ে চেষ্ঠা করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। ২৭ রান করে তিনি ফিরেছেন রউফের শিকার হয়ে। ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান খরচায় ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন এই পেসার। আগের ম্যাচের নায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি ১ উইকেট নিলেও রান আটকে রেখেছেন। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়েছেন ভারত ম্যাচের নায়ক। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ ও ইমাদ ওয়াসিম। এর ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ সংগ্রহ নিউজিল্যান্ড।আগামী বৃহস্পতিবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। ৩১শে অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ভারত।