দৌলতখানে বাপ-বেটার জিম্মিদশায় এলাকাবাসী।।

তুহিন খন্দকার, জেলা সমন্বয়ক ভোলা:
ভোলা দৌলতখান উপজেলা বাবা ও ছেলেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জিম্মি হয়ে পরেছে এলাকাবাসী।স্থানীয়রা জানায়, দৌলতখা উপজেরার দক্ষিণ জয়নগর ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অজুদ হাওলাদার। ছিলেন উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে এলাকার দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি, সালিশ বাণিজ্য করে একের জমি অন্যেকে দখল বুঝিয়ে দিয়ে কামিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বিগত দৌলতখান উপজেলা নির্বাচনে নানা অপকর্মের অভিযোগের পাহাড় হওয়ার কারণে হারিয়েছেন সরকার দলের সমর্থন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে গুণধর পুত্র মামুন ও মাসুমকে দিয়ে নুর মিয়ার হাট এলাকায় গড়ে তুলেছে ত্রাসের রাজত্ব। এলাকায় চুরি, ছিন্তাই, ডাকাতি তাদের প্রতিদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে। নিজের প্রভাব খাটিয়ে মামুন হয়েছেন দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মামুন একের পর এক নিরীহ মানুষের জমি দখলের উৎসবে মেতেছে। তার জমি দখলের হাত থেকে রক্ষা পায়নি একজন গ্রাম পুলিশ। ওই গ্রাম পুলিশের ঘর দখল করে নিজের অফিস কক্ষ বানায় মামুন। এমনকি তার হাত থেকে রেহাই পায়নি তার আপন চাচা অদুদ হাওলাদার ও তার ছেলে শাহীন। বিভিন্ন সময়ে কারণে-অকারণে হামলা চালিয়ে আহত করে বহু বার।গত রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভোলা বোরহানউদ্দিন বড়মানিকা ৪নং ওয়ার্ড সরকারি ভবন নির্মাণের রড, সিমেন্ট চুরির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের পা ভেঙে দেওয়ার প্রকাশ্য হুমকি দেয় মামুনের ছোট ভাই সন্ত্রাসী মাসুম। হুমকির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিও স্থানীয় শাহীন ফেসবুকে শেয়ার করায় অজুদ হাওলাদারের নেতৃত্বে হামলা চালায় মামুন, মাসুমসহ একদল সন্ত্রাসী। ওই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রড, সিমেন্ট চুরির ভিডিও দক্ষিণ জয়নগর এর বাসিন্দা অহিদ হাওলাদারের ছেলে শাহিন তার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করায় রাত সাড়ে ৮ টায় দৌলতখান উপজেলার নুর মিয়ার হাট বাজারে মাদকাসক্ত সন্ত্রাসী মাসুম তার ভাই মামুন ও তার পিতা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অজুদ হাওলাদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী শাহিনের উপর হামলা চালিয়ে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। আহত শাহিন ও হামলাকারী সকলে দৌলতখান উপজেলা দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পরে বাজারের লোকজন অচেতন অবস্থায় শাহিনকে দৌলতখান হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নুর মিয়ার হাট বাজারে স্থানীয়রা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। স্থানীয়রা আরো জানায়, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অজুদ তার দুই ছেলে মামুন ও মাসুমকে দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মামুন স্থানীয় দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষের জমি জোর পূর্বক দখল, সালিশ বিচারের নামে অর্থ-বাণিজ্য করা তার পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাসুম নোয়াখালী কুমিল্লায় তার নানা শশুর বাড়ী হওয়ার সুবাদে সেখান থেকে মাদক এনে বিক্রি ও সেবন করার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এলাকায় চুরি-ছিনতাই ও নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তার উপর হামলা চালায় মাসুম। তার ভাই মামুন ও বাবা ওজুদ মিয়ার ছত্রছায়ায় মাসুম এলাকায় অপরাধের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত অজুদ হাওলাদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে নারাজ। সাংবাদিকরা যে তথ্য পেয়েছে তা প্রকাশ করতে বলেন। এ বিষয়ে দৌলতখান থানার (ওসি) জাকির হোসেন জানান, ডিউটি অফিসার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। একটি অভিযোগ গ্রহণ করেছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাবা ও ছেলেদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। অতি শীগ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভোলা ২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সাধারণ জনগণ।

ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান

SHARE