ক্রাইম ডেস্কঃ
ভোলা নিউজ-১৯.০৪.১৮
ভোলার দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াসিন লিটনের ঘুটির জোর কোথায়। জেলা আইনজীবী সমিতির এক মহরারকে রাতভর গন ধর্ষন করেও ক্ষান্ত হননি, শারিরিক নির্যাতনে ১৫ দিন ধরে মৃত্যু যন্ত্রনায় ভোলা সদর হাপাতালে কাতরাচ্ছেন। ডাক্তার বলছেন এ পর্যন্ত ৫ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। পুলিশ বলছেন তারাও এসে ভিকটিমের মৃত্যু যন্ত্রনা দেখে গেছেন। অতছ কোন মামলা নেয়ার সাহস হয়নি পুলিশের। সর্বশেষ জেলার জাস্টিস অবদ্যা পিস জেলা জজ ফেরদাউস আহমেদ ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভোলার সাধারন মানুষের প্রশ্ন চেয়ারম্যান লিটনের ঘুটির জোর কোথায়? আদৌ পুলিশ গ্রেফতার করবে কিনা এ অত্যাচারী চেয়ারম্যানকে? এদিকে লিটন চেয়ারম্যানসহ দ্রুত দোষিদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছে ভোলা আইনজীবী সমিতির করনিক নেতারা। না হলে আদালতের কার্যক্রম বর্জনসহ বড় ধরনের আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন মহরার নেতারা। আদালত সূত্রে জানাযায়, ভোলার দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন লিটনের নেতৃত্বে ভোলা জেলা আইনজীবী সমিতির এক মহিলা করনিককে কুপিয়ে যখম করে গণধর্ষণের আভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল ভোলা জেলা দ্বায়রা জজ ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে ভিক্টিমের মেয়ে মুন্নি আক্তার বাদী হায়ে চেয়ারম্যান সহ ৭জন ও অজ্ঞাত ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-২৫৯/১৮। আদালত মামলাটি এফআইআর নেয়ার জন্যদৌলতখান থানার ওসিকে আদাশ প্রদান করেন। সূত্র মতে জানাযায়,উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ভিক্টিম তাসলিমা বেগমের স্বামী আলাউদ্দিন গত ৭ বছর পূর্বে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হয়। এর পর তার ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য সে কোন উপায় অন্ত না পেয়ে ভোলা আইনজীবী সমিতির করনিক সদস্য হয়ে (যার আইডি বিবিএ নং-৩৬১) এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন সুমনের সাথে কাজ করত। সেখানে তাসলিমা যা উপার্জন করত তা দিয়ে সন্তানদের নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করে আসছিল। গত ৩ এপ্রিল ২০১৮ তাসলিমা প্রতিদিনের মত আদালতের কাজ সেরে বাংলাবাজার থেকে বাসার জন্য বাজার-সদাই করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মধ্য জয়নগর কাজীর রাস্তা দিয়ে বাড়ীতে যাচ্ছিল। ওই মহুর্তে তাসলিমা কাজী বাড়ীর সামনে গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা একটি সন্ত্রাসী দল প্রথমে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুখ বেঁধে কাজী বাড়ীতে নিয়ে যায়। এসময় দূবর্ৃৃত্তরা তাকে কাজি বাড়ীর মহাসিনের ঘরের সামনে নিয়ে দ্বার কারায়। ওই মুহুর্তে তাসলিমা মহাসিনের ঘরের সিড়িতে ওই এলাকার চেয়ারম্যান ইয়াছিন লিটনকে দেখতে পায়। তাসলিমা কিছু বুঝার আগেই ইয়াছিন লিটন এসে তাসলিমাকে কয়েকটি চর থাপ্পর দিয়ে বলে তুই জীবনে আমার অনেক ক্ষতি করেছস, আজ তোর কোন রক্ষা নাই। এসময় তাসলিমা লিটনের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইলে সে তাকে আরো মারধর করে, ওই ঘরের মালিক মহাসিনসহ একটি দূর্বৃত্ত চক্রের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তিতে, মহাসিন, নোমান, কালা লিটন, নুরুদ্দিন, ছালাউদ্দিন, শাহিন ও শেখ কামালসহ অজ্ঞত আরো ২/৩জন তাসলিমাকে মহাসিনের ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এতে তাসলিমা আপত্তি ও দৌড়ে পালাতে চাইলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেদরক মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কপালে কোপ দিয়ে গুরুতর যখম করে। এক পর্যায়ে তাসলিমা সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে আচেতন হয়ে পরলে উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের কয়েকজন তাকে একের পর এক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে সন্ত্রসীরা তাকে হত্যা করার জন্য প্রস্তুতি নিলে তাসলিমা তার সন্তানের জন্য দূর্বৃত্তদের কাছে জীবন ভিক্ষা চায়। এর পর এ ঘটনার মূল হোতা ইয়াছিন লিটনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকে কয়েকটি খালি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে এবং মামলা না করার জন্য হুমকী ধামকী দিয়ে ভোর রাতে তাসলিমাকে তার বাড়ীর পাশের একটি মাঠের মধ্যে ফেলে রাখে। পরে তাসলিমার ডাক চিৎকারে তার মেয়ে মুন্নি ও স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল দৌলতখান থানার পুলিশ ভোলা সদর হাসপাতালে এসে তাসলিমার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এবং ধর্ষণের আলামত নির্নয়ের জন্য তাকে মেডিকেল চেকাপ করানো হয়। ভোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৯দিন যাবৎ তাসলিমাকে ৫ ব্যাগ রক্ত ও সর্বোচ্চ সেবা দেয়া সত্ত্বেও তার অবস্থার উন্নতি না দেখে তাকে ১১ এপ্রিল বরিশাল শেবাচিে স্থানান্তর করে। বর্তমানে তাসলিমা শেবাচিমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধিন রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, তাসলিমার উপর রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এতে তার মাজা ও মাথায় প্রচন্ড আঘাত লেগেছে। যে কারণে সে হাটতে পারছে না এবং মাথা দ্বার করাতে পারছে না। সম্পূর্ণ সুস্থ্য হতে হলে তাকে ব্যায়বহুল উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। জানাগেছে বার্তমানে অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা চালাতে পারছে না তাসলিমার পরিবার। অন্যদিকে সংসারের একমাত্র উপার্যক তাসলিমাকে না পেয়ে তার ছোট ছোট সন্তানরা খাদ্যের অভাবে মানবেতর জীবন জাপন করছে। অন্য দিকে উল্লেখিত ধর্ষক চক্রের লোকদের ভয়ে তাসলিমার পরিবারের সদস্যরা বাড়ীতে যেতে পারছে না এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকী ধামকী অব্যাহত রেখেছে আসামীরা । এ ব্যাপারে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এনায়েত হোসেন জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত ১নং আসামী চেয়ারম্যান ইয়াছিন লিটন জানান, এ ঘটনায় সে জড়িত ছিলেন না। তাকে সড়যন্ত্রমূলক ভাবে মামলায় আসামী করা হয়েছে।