আকতারুল ইসলাম আকাশ,ভোলা:
ডেঞ্জার জোনে পরিনত হয়েছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ভোলা-বরিশাল মহাসড়ক। মাস পেরোতেই এই দুই সড়কে বেপরোয়া সড়ক দুর্ঘটনায় ঝড়ে যায় অনেক তাজা প্রাণ। স্মরণকালের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের এই দ্বীপ শহরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এবং সর্বাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এই দুই সড়কে।সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকালে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের বিটুমিন ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দুই আরোহীসহ একটি মোটরসাইকেলের। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।ভোলা-লক্ষ্মীপুর ভোলা-বরিশাল মহাসড়ক ১৩/১৫ কিলোমিটার। মহাসড়কের শুধু এই ১৩/১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কেন এত দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে, এর সঠিক কারণ সুনির্দিষ্টভাবে কেউ চিহ্নিত করতে পারেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এবং স্থানীয় থানা পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারাও এর স্থায়ী একটি সমাধান চেয়ে নানা দাবি তুলে ধরেছেন।জানতে চাইলে ভোলা সদর ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমান বলেন, ভোলা-লক্ষ্মীপুর এবং ভোলা-বরিশাল মহাসড়ক সবচেয়ে ভালো। এই দুই সড়কে কোনো খানাখন্দ নেই। এ কারণে চালকরা ওই দুই সড়কে অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন।তিনি বলেন, এই দুই মহাসড়কে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন চালকরা। করোনা সংকটের কারণে অনিয়ন্ত্রিত গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যে কারণে চালকরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।গত শুক্রবার বিকালে বাপ্তা এলাকায় সওজের গাড়ি ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান বেপারি। তিনি বলেন, দুটি যানবাহনেরই গতি ছিল বেপরোয়া। একটি অটোরিকশা ওভারটেক করতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা সওজের ট্রাকটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহীকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। এই দুই সড়কে দুর্ঘটনাগুলো সবচেয়ে বেশি হওয়ায় এলাকাবাসীরা ডেঞ্জার জোন হিসেবে চিহ্নিত এ এলাকায় পথ চলতে আতঙ্কিত থাকেন।তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের এই ৯ মাসে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা-বরিশাল মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮ জনের। এরমধ্যে ১১ মার্চ ভোলা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত হয় এক কিশোর। তার ঠিক ১৪ দিনের মাথায় ২৪ মার্চ ট্রলির ধাক্কায় পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের জাহাঙ্গালিয়া গ্রামে এক বৃদ্ধসহ দুইজনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও ১৯ আগষ্ট ভোলা-বরিশাল মহাসড়কের বাঘা বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় এক শিশুর মৃত্যু হয়।তবে স্থানীয় ভোলাবাসীর দাবি, অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে জেলা ট্রাফিক বিভাগকে। তাহলেই কিছুটা হলেও সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে।