অনলাইন ডেস্ক,ভোলানিউজ.কম,
এক নারীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমার প্রায় দুই মাসেও পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে আরও এক নারী ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ এসেছে।
এই অভিযোগ এনে রাজধানীর বিমানবন্দর থাকায় অভিযোগ জমা দিয়েছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক সংবাদপাঠিকা। কিন্তু ১১ দিনেও পুলিশ এ বিষয়ে কিছুই করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
গুরুতর অভিযোগ উঠা এই পুলিশ কর্মকর্তা বারবার ছাড় পাচ্ছেন কি না, এ নিয়ে কথা উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। কিন্তু না যে থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে, সেই থানা, না পুলিশ সদরপ্তর, না মন্ত্রণালয়-যোগাযোগ করে কোথাও এ বিষয়ে সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
এক নারীকে জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ প্রকাশ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে তদন্তও করেছে পুলিশ সদরদপ্তর। আর এই অভিযোগ উঠার পর গত ৯ জানুয়ারি ডিআইজি মিজানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দ্রুততম সময়ে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন।
কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমার দেড় মাসের মধ্যে নতুন করে সংবাদ পাঠিকা ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আলোচনায় এসেছেন মিজান।
ওই সংবাদ পাঠিকার মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা অডিওতে কয়েকজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে নানা ধরনের কটূক্তি করতেও শোনা যায় পুরুষ কণ্ঠটিকে। ওই পাঠিকা জানিয়েছেন এটি মিজানের কণ্ঠ।
ওই সংবাদ পাঠিকা গত ১০ এপ্রিল বিমানবন্দর থানায় একটি অভিযোগে দায়ের করেন। এতে বলা হয়, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান গত ২৯ মার্চ দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে ০১৭৯৪২০২০২০ নম্বর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনকি অশ্লীল ছবি তৈরি করে প্রচারেরও হুমকি দেন।
অভিযোগ ও তদন্তের অগ্রগতি জানতে বিমানবন্দর থানার ওসি নূর-ই-আজম মিয়া গণমাধ্যমকর্মীর পরিচয় পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কথা শুরু করেন। কিন্তু ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগের বিষয়ে জানতেই তিনি ‘ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী এলিনা খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেশে এমন ঘটনা যখন ঘটবে তখন পুলিশ তাদেরকে আটক করবে, তাদেরকে বিচারে সোপর্দ করবে। যাদের হাতে এত দায়িত্ব সেই পুলিশই যদি খারাপ হয়ে থাকে তাহলে সে কীভাবে আরেকজনের খারাপ কাজ উম্মোচিত করবে এটা একটা প্রশ্ন রয়ে যায়।’
পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে বা বিচারের আওতায় আনতে বিলম্ব করা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে এলিনা খান বলেন, ‘ভিকটিম সরাসরি মামলা করুক। কারণ প্রায় সময় দেখা যায় বিভিন্ন বিভাগে তদন্তে বিলম্ব হয়। পুলিশের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক নারী আগেই অভিযোগ দিয়েছিল, এমনকি তার নির্যাতনের বিষয় প্রমাণিত হয়েছে। তাই পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে কাজ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।’
‘ওই নারীর (সংবাদ পাঠিকা) উচিত সাহস করে এগিয়ে আসা। তাহলে দেখা যাবে পরবর্তী পুলিশের কেউ এমন কাজ করতে গেলে ভাববে।’
এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি মিজান ওই সংবাদ পাঠিকাকে হুমকি দেওয়ার পর তিনি মামলা করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তিনি সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন। মিজানের বিরুদ্ধে সকল তথ্য উপাত্ত নিয়ে সংবাদ সংবাদ পাঠিকার সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও তা আর করেননি।
এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কারণ ছিল ডিআইজি মিজানের দাপট। ওই সংবাদ পাঠিকা ভয়ে তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
সংবাদ পাঠিকাকে ডিআইজি মিজানের হুমকি দেয়ার অডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে এরই মধ্যে। তারপরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা কেন নিচ্ছে না, তার যেমন জবাব মিলছে না, তেমনি এক নারীকে জোর করে তুলে দেয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা পড়ার দুই মাসেও কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, সে প্রশ্নেরও জবাব নেই কারও কাছে।
বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা কিছু বলতেও চাইছেন না।
মিজানের বিরুদ্ধে এক নারীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ প্রধানের হাতে জমা পড়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি। দুই দিন পরেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ শাখায় পাঠায় পুলিশ সদরদপ্তর।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে ডিআইজি মিজানের বিষয়ে কী সুপারিশ আছে, তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সত্যতা কতটুকু-এ বিষয়েও পুলিশ সদরদপ্তর বা তদন্ত কমিটির সদস্য সবাই চুপ।
সংবাদ পাঠিকাকে সপরিবারে হত্যার হুমকি সংক্রান্ত অডিওর কথোপকথন:
মিজান: তোর জামাইরে ঘর থেকে বাইর হতে বল। পোলাপান রেডি আছে। সব রেডি আছে। আমার কথার বাইরে যদি চলোস তোরে মাইরা ফালামু।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কোত্থাও যাইনি। আমার জামাইকে বলছিলাম, ওর অফিস চলছিল।
মিজান: যেখানেই যাবি তোর নুড (অশ্লীল) ছবি পাঠানো হবে। তুই যেখানে যাবি। তুই আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করছিস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিছুই করিনি। আমার ছেলের কসম খাইয়া বলছি, আমি কিছুই করিনি।
মিজান: শুধু একটু বাসা থেকে বাইর হয়ে দেখ। তুই যদি আমার কথা না শুনোস, তুই সাম্বাদিকদের ‘কুত্তার বাচ্চাদের’ বলবি আমি থ্রেট করছি। আমাকে সাসপেন্ড করাইছিস না?
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করি নাই, আমি কিচ্ছু করি নাই।
মিজান: কুত্তার বাচ্চা, তোকে অ্যারেস্ট করতে এখন ভাটারা থানার পুলিশ যাচ্ছে।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করি নাই, আমি কিচ্ছু করি নাই।
মিজান: পুলিশ যাচ্ছে সার্চ ওয়ারেন্ট হইছে। আসামি তুই আর তোর জামাই। কোর্টে তো জিডি পাঠানো হয়েছে; আজকে কোর্টে মামলা হইছে। তুই আমার সাথে চ্যালেঞ্জ দিবি?
সংবাদ পাঠিকা: আমি আপনার সাথে কোনদিনই চ্যালেঞ্জ দেই নাই।
মিজান: আমার সাথে চ্যালেঞ্জ দিয়ে তুই আমার চাকরি খাইছিস। মিডিয়ায় সবকিছু দিছিস তুই।’
সংবাদ পাঠিকা: আমি জীবনে কোনদিন কাউকেই কিছু দেইনি।
মিজান: (গালি দিয়ে) এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তরা ছাড়বি। নাইলে তোরে মাইরা ফালামু। যা হয় হবে। তুই রেকর্ড কইরা রাখ।
সংবাদ পাঠিকা: (কাঁদতে কাঁদতে) প্লিজ আমার বাচ্চার জীবনটারে নষ্ট কইরেন না।
মিজান: তুই আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করছিস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করি নাই।
মিজান: তুই আসিস না কেন, আমি তোকে ডাকলে?
সংবাদ পাঠিকা: কসম করে বলছি, আমি মেন্টালি ভালো নেই।
মিজান: তুই জামসেদ মিজানকে দিছিস, ইকু (গালি) ..পোলারে দিছিস।
সংবাদ পাঠিকা: খুব অসুস্থ। আল্লাহর কসম, আপনি কোরআন শরিফ আমার হাতে দেন। আমি কাউকে কিচ্ছু দেইনি।’
মিজান: তোর জামাইরে বের হতে বল। রাস্তায় বের হতে বল। টুকরা টুকরা করব। আর তোরে করব ৬৪ জেলায় ৬৪ টুকরা।… গালি। আমার কথার বাইরে যদি ঢাকা শহরে চলছ তোকে আমি মাইরা ফালামু। (গালি)
সংবাদ পাঠিকা: দয়া করে আপনি গাড়ি নিয়ে যান।
মিজান: এখন তুই আত্মহত্যা করবি। না হলে তোরে মাইরা ফালামু আমি। পৃথিবীর কোনো শক্তি নাই। এখন বের হ। তোরে পাহারা দিতে ১০টা মোটরসাইকেল থাকবে। তোর জামাই বের হোক কোথায় যায় দেখি। তুই আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভ দিবি, আমার বিরুদ্ধে কথা বলবি না, আমার বিরুদ্ধে লিখবি, জিডি কইরা রাখছি উত্তরা পূর্ব থানায়। জিডি নাম্বার দেব?
সংবাদ পাঠিকা: আমার কিছু লাগবে না। আপনি যা করার করেন। আমি ইকো (মারিয়া আক্তার ইকো) না।
মিজান: তাহলে আমার কাছে আয়। আমি আসতেছি একটু পরে, আয়।
সংবাদ পাঠিকা: আমি ইকো না। (কেঁদে উঠে) আমি কিচ্ছু করি নাই।
মিজান: অভিনয় করতাছোস না? ২৮ বছরের চাকরিজীবন ধ্বংস করেছিস। তোকে ছাড় দিব আমি…
সংবাদ পাঠিকা: আমি সত্যি কিচ্ছু করি নাই, অন্তত এটা বিশ্বাস করেন।
মিজান: সরি বল, কিচ্ছু বলব না।
সংবাদ পাঠিকা: আমার গলায় ছুরি লাগালেও বলব আমি কিছু করিনি। আমি এগুলো কিছু করি নাই।
মিজান: ৬৪ টুকরা করব। জিরো পয়েন্টে তোর মৃত দেহের মাথা যাবে। তোর যদি সাহস থাকে বাইর হোস আবার। ঢাকা শহরে আবার বের হস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি এখনি বের হব। আমারে মাইরা ফেলেন। এই জীবন আর চাই না।
মিজান: পৃথিবীর যেখানে যাবি তোর ব্লুফিল্ম যাবে গালি …। তোকে সেদিন ডেকেছি তুই বলেছিস, কথা বলতে পারব না। আমি অসুস্থ। অসুস্থ হলে আবার কেএফসিতে গেছিস, সেখান থেকে কোথায় বের কোথায় গেলি। আমি তোর প্রত্যেকটা মুহূর্তের খবর রাখি।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কোথাও যাইনি। আমি বাসা থেকে বের হই নাই।
মিজান: তুই এখন বের হ। গ্রুপ রেডি আছে। তোর জামাইকে বের হতে বল।
সংবাদ পাঠিকা: আপনি আমার যত ক্ষতিই করেন আমি আর কিছুই বলব না। আপনি অ্যারেস্ট করতে চাইলে এখনি পাঠান। আমি বাসায়ই আছি।
মিজান: আমি যাব না। থানা পুলিশ যাবে। এজাহার বের হইছে। (র্যাবের দুইজন শীর্ষ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে) ওদের বল তোকে বাঁচাইতে। তবে আমার সাথে ভদ্রভাবে চল কিছু হবে না। পৃথিবীর কোনো মানুষ তোকে টাচ করতে পারবে না।
সংবাদ পাঠিকা: আপনি ভুল করতেছেন। একদম ভুল করতেছেন। অঝরে কান্না…
মিজান: লেখ। আমার বিরুদ্ধে লেখ। আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন কর। ফেসবুকে দে।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করব না, কিচ্ছু করি নাই।
মিজান: ওকে পুলিশ আসতেছে। থানা থেকে ফোন করেনি?
সংবাদ পাঠিকা: আপনি পাঠান প্লিজ। আমি বাসায়ই আছি।
মিজান: থানা থেকে ফোন করে নাই। করছে? সমস্ত চ্যানেলে গেছে ওই নিউজ।
সংবাদ পাঠিকা: আমি খুব অসুস্থ।
মিজান: তোরে তিনশ ফিটে নিয়ে ইজ্জত হরণ করতে চাইছি না? মানুষকে জড়ো করে বলছিস না? যেদিন মানুষ জড়ো করে অপমান করছিস এর রেজাল্ট আমি মিজান যদি বেঁচে থাকি, আমি কুত্তার বাচ্চা না হই, আমার বাবা যদি পয়দা করে থাকে, তাহলে তোরে আমি দেখাব। তুই যদি আমার (গালি)ছিড়তে পারিস। আমাকে সাসপেন্ড করেছিস তোরা অসুবিধা নেই।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করব না।
মিজান: তুই আমাকে মানুষের সামনে অপমান করছিস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি আপনাকে সাসপেন্ড করাই নাই। আপনি সেদিন আমাকে মারছেন।
মিজান: চাইলে মিডিয়াতে যাইয়া বলবি, আমি ভুল করছি। উনাকে অপমান করে আমি ভুল করছি। মিডিয়ায় স্টেটমেন্ট দিবি। মিডিয়ার সামনে গিয়ে। তুই যদি বাংলাদেশে থাকতে চাস যদি, বাঁচতে যাস যদি, না হলে তোর জামাই, তুই.. তোর সংসারসহ সব ছিন্নভিন্ন কইরা ফালামু আমি। তুই জিডি কর, প্রেস কনফারেন্স কর আমার বিরুদ্ধে। লাইভ দে, যা করার কর।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করব না।
মিজান: আর যদি তোর সাহস থাকে বের হ।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কিচ্ছু করবো না।
মিজান: বের হ… আমার লোক আছে, আমিও আছি এখন। আমার চাকরি তো নাই এখন। হারামির বাচ্চা, ফেসবুকে লাইফ দিবি না? মিডিয়ায় দিবি…, তোকে কোন মিডিয়া নিবে? সমস্ত মিডিয়ায় তোর ওইটা গেছে। এখন ফেসবুকে যাবে, ভাইবারে যাবে। এতদিন দেই নাই এখন ইউটিউবে (নুড ছবি) যাবে, ফেসবুকে যাবে, সব জায়গায় যাবে। আর আমার সঙ্গে ভদ্র হয়ে চলবি, কিচ্ছু হবে না তোর। তোকে শেল্টার দেব আমি, আমি, আমি মিজান।
সংবাদ পাঠিকা: না আমি কিচ্ছু করিনি। আমাকে কেন দোষ দেন। আমি কিচ্ছু করি নাই। অঝরে কান্না।
মিজান: কেন? প্রগতি সরণিতে আমাকে অপমান করিস নাই?
সংবাদ পাঠিকা: সেদিন আমাকে মারছিলেন। না মারতেন আমাকে। আপনার উপকার করতে আমি গেছিলাম।
মিজান: এখন বাইরে আয়। রাস্তায় বাইর হইয়া দেখ একদিন। তোকে মেরে দরকার হলে আমি অ্যারেস্ট হব।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কী ক্ষতি করছিলাম। আমি কোনদিন কোন খারাপ কাজ করি নাই। আমি ওই মেয়ে না।
মিজান: তোকে কোন জায়গায় শুতে দিবো না। এক জায়গায়…
সংবাদ পাঠিকা: প্লিজ স্ল্যাং ইউজ করবেন না।
মিজান: ইয়েস, ইউ আর অ্যা প্রস্টিটিউট। তুই আমার ২৮ বছরের ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছিস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কাউরে কিচ্ছু বলি না।
মিজান: এখন পোলাপান রেডি আছে। ওই দিন তো একটা মোটরসাইকেল গেছে পেছনে আরও আটটা মোটরসাইকেল ছিল। আবার সিকিউরিটিকে এই গাড়ি আমাকে ফলো করে। বাইরে আই একেবারে ভেতরে ঢুকাইয়া দিব। ভেতরে, ভেতরে। আর ভদ্রভাবে আমার সাথে চলবি, আমার ফ্যামিলির কাছে যাবি, রত্নাকে (স্ত্রী) সরি বলবি, আমাকে সরি বলবি, লিখিতভাবে মিডিয়াকে বলবি যে, না, আমি যে কাজটি করেছি ভুল করেছি। উনার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। আমিও বলব।… তুই কোথায় হাত দিয়েছিস জানিস না। পুলিশের ডিআইজি গায়ে হাত দিছিস তুই।
সংবাদ পাঠিকা: আমি হাত দেই নাই।
মিজান: হাত দিছিস। তোরে এখনও বলি। তুই ভালো হয়ে চল। কিচ্ছু হবে না।
সংবাদ পাঠিকা: আমি ছেলের কসম, আমার ছেলে কসম খেয়ে বলছি…
মিজান: তুই এবার যেয়ে দেখ না কি হয়।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কোথায় যায়?
মিজান: তোর জামাইরে বের হতে বল। কুত্তার বাচ্চারে টুকরা টুকরা করব। লাইভ করবি আমার বিরুদ্ধে। করিস। রেকর্ড করিস না? রেকর্ড কর।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কি ক্ষতি করছি? আমি কিছু করি নাই, সবার সামনে বলতে পারি।
মিজান: কুত্তার বাচ্চা বের হয়। বের হয়ে দেখ শুধু, একদিন এক সেকেন্ডের জন্য বের হ।
সংবাদ পাঠিকা: ঠিক আছে।
মিজান: কি ঠিক আছে?
সংবাদ পাঠিকা: মেরে ফেলেন আমাকে।
মিজান: তুই এখনই আসবি। আমার গাড়িতে উঠবি। তোকে সেভ করব আমি। লিখিতভাবে প্রকাশ্যভাবে ক্ষমা চাইবি। মিডিয়াতে ক্ষমা চাইবি যে, আমার ২৮ বছরের ক্যারিয়ার ধ্বংস করছিস।
সংবাদ পাঠিকা: আমি কোন ক্ষতি করি নাই।
মিজান: কোরআন শরিফ ছুঁয়ে বলতে পারবি আমার ক্ষতি করি নাই?
সংবাদ পাঠিকা: আমি কোরআন শরিফ না সব ছুয়ে বা আমার ছেলের মাথার কসম খেয়ে বলতে পারব। তদন্ত কমিটির কাছে আপনার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করিনি।
মিজান: ঠিক আছে, ভাটারা থানার মামলায় অ্যারেস্ট হ। তারপর অন্য কথা বলব। আমার বিরুদ্ধে আর একটা অভিযোগ করিস, ফেসবুকে লাইভ দিস… আমি অল রেডি জিডি করে রাখছি। যে তুমি আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভ দিবা।
সংবাদ পাঠিকা: কোন অসুবিধা নেই। আমি কিচ্ছু করব না। আপনি আর কি করতে পারবেন? আমাকে মেরে ফেলতে পারবেন। আমার স্বামীকে মেরে ফেলতে পারবেন। আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলতে পারবেন।’
(আল-আমিন এম তাওহীদ,২১এপ্রিল-২০১৮ইং)