গুজবে কান নয়, সঠিক তথ্য জানি

 

 

।। তাইফুর সরোয়ার।। 

সোস্যাল মিডিয়া, ইন্টারনেট ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের জন্য আজকাল যে কোন বিষয়ের তথ্য প্রাপ্তি মানুষের হাতের নাগালে। এসব মিডিয়ার কল্যানে আমরা সারা পৃথিবীতে ঘটমান যে কোন ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে অবগত হতে পারছি, জানতে পারছি সর্বশেষ সংবাদ। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্যের সব-ই কি সঠিক? না, সব তথ্য সঠিক নয়। অনেক তথ্যের আড়ালে ঘাপটি মেরে আছে গুজব। গুজবের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি পক্ষ সবসময়ই নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করে থাকে।

সোস্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি গুজব সৃষ্টির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন ভূঁইফোঁড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল দায়ী। চটকদার শিরোনামের মাধ্যমে এ সকল পোর্টাল পাঠক ও দর্শককে তাদের ওয়েবসাইটে আকৃষ্ট করে। কিন্তু শিরোনামের সাথে মূল সংবাদের আকাশ পাতাল পার্থক্য। আনেকেই মূল খবর না পড়ে শুধু শিরোনাম দেখে তা সোস্যাল মিডিয়ায় লাইক ও শেয়ার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এভাবেই গুজব ডাল পালা মেলতে শুরু করে। অনেকই সোস্যাল মিডিয়ায় বিভিন্নজনের ওয়াল থেকে প্রাপ্ত স্ট্যাটাসের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত না হয়ে তা লাইক ও শেয়ার করে থাকেন। এভাবেই পদ্মা সেতু নির্মাণে মাথা লাগা, লবনের দাম বৃদ্ধি, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর খবরের মতো গুজব এক জন দুই জন করে ছড়িয়ে পরে সারা দেশময়।

করোনার এই মহাসংকটকালেও থেমে নেই গুজব। বরং হাজির হচ্ছে বিভিন্ন রূপে। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই সোস্যাল মিডিয়ায় গুজবের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে করোনা সম্পর্কে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য। বাংলাদেশে করোনা আসবে না, করোনা থেকে মুক্তির দাওয়াই হিসেবে থানকুনি পাতা খাওয়া, সুরাইয়া তারার উদয় – করোনা সম্পর্কে এমন অগনিত গুজব ঘুরে বেড়াচ্ছে সোস্যাল মিডিয়ায়।

গুজব ক্ষতি ডেকে আনে ব্যক্তি, সমাজ তথা দেশের। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সোস্যাল মিডিয়ায় কোন পোস্টে লাইক বা শেয়ার দেয়ার আগে অবশ্যই তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চত হতে হবে। যাচাই বাছাই করে তবেই আগাতে সামনের দিকে। ইন্টারনেটে হোক বা অন্য কোনো মাধ্যমে হোক কোন চটকদার তথ্য সামনে হাজির হলে, সেই তথ্যের উৎস কোথায় এবং উৎসটি এই তথ্য প্রদানের যোগ্যতা রাখে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। 

পর্যাপ্ত তথ্যের ঘাটতি গুজবকে আরো উসকে দেয়। তাই গুজবের ভাইরাস ঠেকাতে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে আরও বলিষ্ঠ ও উচ্চ কণ্ঠে এগিয়ে আসতে হবে। গুজব সৃষ্টির পিছনের মূল হোতাদের খূঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সোস্যাল মিডিয়া, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে গুজববিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচিও হতে পারে অন্যতম একটি কার্যকর উপায়।

গুজব সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। তাই গুজবে কান নয়, সঠিক তথ্য জানি। সত্যের সাথেই থাকি।

SHARE