ডেস্ক রিপোর্ট।। খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সেতু ভেঙে আওয়ামী লীগ নেতার রড চুরির মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এক অটোরিকশা চালক।সোমবার মামলার আসামি ও অটোরিকশা চালক মো. নাজমুল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে জেল-হাজতে পাঠানো হয়।পরদিন মঙ্গলবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফরিদ আলমের আদালতে হাজির হয়ে মো. নাজমুল বলেন, তাকে পানছড়ির ঠিকাদার উত্তম দেবের ম্যানেজার এমরান রমজান মাসের কোনো এক সকালে মোবাইলে ফোন করে বাসায় যেতে বলেন। তিনি উত্তমের বাসায় যাওয়ার পর সেখানে থাকা অনেকগুলো রড অটোরিকশায় করে এমরানের বাসায় দিয়ে আসতে বলেন। রডগুলো সিমেন্ট লাগানো পুরাতন ছিল। এমরান ও নাজমুল মিলে রড অটোতে তুলে এমরানের বাড়িতে রাখার জন্য রওয়ানা হন। এমরানের বাড়িতে সামনে একটি উঁচু টিলা থাকায় অটোরিকশা উঠতে না পারায় এমরান রডগুলো নাজমুলের বাড়িতে রাখতে বলেন। এর কয়েকদিন পর পুলিশ গিয়ে নাজমুলের বাড়ি থেকে রড উদ্ধার করে। এ সময় নাজমুল তার শ্বশুরবাড়ি ছিলেন।উত্তমের ম্যানেজার এমরান ফোন করে নাজমুলকে জানান, উদ্ধার করা রড পানছড়ির ব্রিজ থেকে চুরি করা।পুলিশ নাজমুলের বাবার ঘরের পেছন থেকে রডগুলো উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে; নাজমুল যেন বাড়ি না আসেন।পরদিন পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের জব্বার মেম্বার নাজমুলকে ফোন দিয়ে জানান, নাজমুল যেন বাড়ি না আসেন। পুলিশ যদি নাজমুলকে ধরে ফেলে তাহলে তিনি যেন বলেন, এই রড জয়নাথ বাবু নামে একজনের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন।জব্বার মেম্বার নাজমুলকে আরও বলেন, “তুই পালিয়ে থাক, তোকে ৫০০০ টাকা পাঠাচ্ছি, তুই উত্তম বাবুর নাম বলবি না, তোকে ২০ লাখ টাকা খরচ করে হলেও ছাড়িয়ে আনব।এ সময় ঠিকাদার উত্তম জব্বার মেম্বারের ফোন থেকেই নাজমুলকে বলেন, “তুই পালিয়ে থাক, নিশ্চিতে ঘুমা, তোর সিম ভেঙে ফেল।”জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারহান ইশতিয়াক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সামসুজ্জামান বলেন, “রড চুরির ঘটনায় অটোরিকশা চালক আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আমাদের তদন্তও চলছে, তদন্ত শেষে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিব।”এর আগে পানছড়িতে সেতু ভেঙে রড চুরির ঘটনায় ফাঁস হওয়া ৫ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। সেখানে পানছড়ি উপজেলার ঠিকাদার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উত্তম দেবের সম্পৃক্ততা ওঠে আসে।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান