আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি #
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে মাদকাসক্ত পরিবার বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিধগন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল আক্রান্ত ব্যাক্তিগন মাদকআসক্ত তারা বেশি আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে লেখা এই বাক্যটি যেন একটা জনপ্রিয় পরিহাস ছাড়া আর কিছুই নয়। তারই প্রমাণ মেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ক্যম্পাস জুড়ে। ব্যানসন, গোল্ডলিফ, মার্লবোরো, হলিউড, ডাব্লিউ, ৩০৩, স্টার, ক্যাপাস্টেন, ইজি লাইট প্রভৃতির ধোঁয়ায় ছেঁয়ে গেছে কলা ভবন, শ্যাডো, লাইব্রেরি চত্ত্বর, হাকিম চত্ত্বর প্রভৃতি। এসব জায়গার খুব পরিচিত একটা দৃশ্যপট হল বন্ধুদের আড্ডা, একসাথে চা আর আরেকহাতে সিগারেট।
কালের বিবর্তনে গালপালায় ঘেরা ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা মল চত্ত্বর এখন “বিড়ি চত্ত্বর” নামেই অধিক পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় এর অসংখ্য শিক্ষার্থী ধূমপানের জন্য এসব এলাকা দিয়ে চলাফেরা করতে মোটেই স্বস্তিবোধ করেন না। এখানকার একজন সিগারেট বিক্রেতা হাসান আলির সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনের তার বিক্রি প্রায় ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা, যেখান থেকে লাভ থাকে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। তিনি ১৭ বছর ধরে এই এলাকায় এই ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার মত আরো প্রায় শতাধিক মানুষ ক্যাম্পাসে সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে দর্শনার্থী, রিক্সাচাকক, অন্যান্য বিক্রেতা এমনকি ভিসি বাসভবনের সামনে পাহারাদার পুলিশেরাও তাদের ক্রেতা এবং তারা সর্বসাধারণ এর জন্য উন্মুক্ত জায়গায় ধূমপান করেন। ফলে প্রতিনিয়ত নিকোটিন সহ অন্যান্য দূষিত পদার্থমিশ্রিত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার ফলে যে পরোক্ষ ধূমপান হচ্ছে তাতে শিশুসহ অন্যান্য অধুমপায়ীরাও স্ট্রোকজনিত প্যরালাইসিস, বিভিন্ন ধরনের ক্যন্সার, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, হার্ট এটাক, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা অন্ধত্ব, কিডনি ফেইলর, উচ্চরক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে ভুগছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী গিয়াস মাহমুদ মনে করেন, প্রকাশ্যে ও উন্মুক্ত স্থানে এরূপ ধূমপান করাটা অস্বাস্থ্যকর ও তার মত অধূমপায়ীদের জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর। ট্যুরিজিম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজিমেন্ট এর শিক্ষার্থী জান্নাতের মতে, এসব ধূমপায়ীরা ক্যম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে, অবিলম্বে প্রশাসনের উচিৎ এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।
ধূমপায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট স্মোকিং জোন তৈরি করে বাকি ক্যম্পাস এলাকা ধূমপানমুক্ত করার দাবি শিক্ষার্থীদের বহুদিনের। মাননীয় ভিসি এইব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাবাদী তারা।
উল্লেক্ষ্য যে, প্রকাশ্যে ধূমপান নিতন্ত্রণের আইন পাশ করা হয়েছে নয় বছর আগে। সম্প্রতি আইনের সংশোধনীও আনা হয়েছে জরিমানার অঙ্ক ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করায়। দোকানদার ব্যবস্থাপকদেরও এই জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে।
কিন্তু প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ন্ত্রণের এই আইন যে কতটা ব্যর্থ তার উজ্জ্বল উদাহরণ এই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।