অনলাইন ডেস্ক-ভোলানিউজ.কম,
দেশের প্রথম বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন, ভবিষ্যতে এই দেশের মানুষ পৌঁছে যাবে মহাকাশে, বিচরণ করবে চাঁদে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুর ও বেতবুনিয়ায় স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন উদ্বোধন উপলক্ষে দেয়া ভাষণে এই কথা বলেন সরকার প্রধান।
অনুষ্ঠান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার অনুষ্ঠানে জানান, এই স্টেশন দুটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তদারকি করা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এই নামফলক জয়ের হাতে তুলেও দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি, রকেটটাও যথাস্থানে ফিরে এসেছে। আমরাও একদিনে স্পেসে চলে যেতে পারব, আমরাও একদিন জয় করব; চাঁদের দেশে পৌঁছে যেতে পারব। আগে চাঁদের দেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতাম, এখন চাঁদের দেশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
‘আমাদের বিমানবাহিনীর প্রধান আছেন, আমি বলব, একটু ভালো করে ট্রেইনিং দিতে হবে আমাদের ছেলেদেরকে, যেন আমরা স্পেসে পৌঁছে যেতে পারি।’
গত ১১মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ হয় বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইন বঙ্গবন্ধু-১। এরই মধ্যে এটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে গেছে এবং এটি নিয়ন্ত্রণ এবং এ থেকে পাওয়া সংকেত গ্রহণ এবং সংকেত পাঠাতে এই গ্রাউন্স স্টেশন দুটি তৈরি করা হয়েছে।
স্যাটেলাইট ব্যবহার করে দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা, সাগরে বা নদীতে আবহাওয়ার বার্তা পৌঁছে দিয়ে জীবন রক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবায় গুণগত পরিবর্তন আনার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা সারাবিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারব। আমাদের ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা লাভ করতে পারবে। স্পেস বিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।’
‘আমরা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র করছি, পরমাণু বিজ্ঞানী আমাদের প্রয়োজন। সমুদ্র গবেষণা করছি, সমুদ্র বিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষার সুযোগ হবে।’
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের বিনামূল্যে সাবমেরিক কেবলে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পায়ে ঠেলা নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বাংলাদেশে কম্পিউটার শিক্ষা-কম্পিউটার ব্যবহার করা, সেই সাথে সাথে জনগণকে সেবা দেয়া, ইন্টারনেট সার্ভিস সমগ্র বাংলাদেশে করে দেয়া, এটাতে বিএনপির আপত্তি ছিল। তাতে নাকি সব তথ্য বিদেশে পাচার হয়ে যাবে।’
‘তাই যখন আমাদের এই অঞ্চলে সাবমেরিন কেবল বিনা পয়সায় পাওয়ার সুযোগ ছিল, সেটা তারা গ্রহণ করেনি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা এর উদ্যোগ নেই।’
১৬ কোটি মানুষের ৯ কোটি এখন ইন্টারনেট ব্যবহারের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষাটা আমরাই প্রথমবার শুরু করেছিলাম, মানুষের কাছে কীভাবে নিয়ে যাব।’
‘এখন বলতে পারি, সেটা আমরা করতে পেরেছি, ভবিষ্যতে আরও চাহিদা বাড়বে।’
লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দেয়ার কারণে ছেলে মেয়েদের গ্রামে বসেও বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাওয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজের কম্পিউটার শিক্ষা ও টাইপ করার বিষয়টিও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে কম্পিউটার চালানো শিখেছি। আর বাংলা টাইপ এখন যিনি মন্ত্রী সেই মোস্তফা জাব্বাবের কাছ থেকে শিখেছিলাম।’
‘তবে এখন বাংলা টাইপটা আর পারি না। প্রধানমন্ত্রী হয়েই এই ক্ষতিটা হয়েছে।’
‘৯৬ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী হলাম আমি ফাইল সই করতে করতেই সময় যায়। কম্পিউটারে স্পিড আর নাই। ভালো স্পিড ছিল এক সময়। নিজের লেখা নিজেই লেখতে পারতাম এক সময়। এখন আর হয় না।’
‘জানি না কবে ছুটি পাব, আবার শুরু করব। কিছু কিছু করতে পারি, সংশোধন করতে পারি, কিন্তু আগের মতো বাংলা টাইপটা হয় না। ইংরেজিটা কিছু পারি, অল্প। বাংলা টাইপটা ভুলে গেছি।’
(আল-আমিন এম তাওহীদ, ৩১জুলাই-২০১৮ই)