উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক:

ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে বাংলাদেশের উন্নয়নের যে যাত্রা শুরু হয়েছে, তা কেউ থামাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ যে দিন বদলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আজ পূরণ হয়েছে। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম আমরা আজ এগিয়ে চলছি। ইনশাল্লাহ এই যাত্রা আর কেউ বন্ধ করতে পারবে না।

বুধবার সেনা সদরে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে খেতাবপ্রাপ্ত ১০১ মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক অনুদান এবং উপহার সামগ্রী তুলে দেন শেখ হাসিনা। পরে শান্তিকালীন বিশেষ অবদান রাখায় সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর ১৩ সদস্যের হাতে পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান।

দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার নানা চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই যে মর্যাদা আমরা পেয়েছি, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের গতিধারাটা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই হচ্ছে লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা দিয়েছিলাম দিন বদলের সনদ। আপনারাই বিবেচনা করে দেখবেন। সেই দিন বদল আমরা করতে পেরেছিলাম কি না। আমি দাবি করব, আমি অবশ্যই দিন বদল করেছি। তবে, আমাদের অনেক দূর যেতে হবে, অনেক উন্নয়ন করতে হবে।’

‘আমাদের লক্ষ্য দারিদ্র্যের হার আরও অন্তত পাঁচ ভাগ কমানোর। বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ। আজকে যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে সেটাকেও আমাদের ধরে রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দেশকে জাতির পিতা স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করেছিল, আজকে সেই বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সুফল আমরা প্রত্যেকটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেব। এদেশের মানুষ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হবে না। অন্নের জন্য হাহাকার করবে না। বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। প্রত্যেকের জীবন সুন্দর হবে। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন।’

বিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এখন অনেক দেশই বাংলাদেশের মত উন্নয়ন করতে চায়।’

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেখেছি আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা কত অবহেলিত ছিল। চেষ্টা করেছি তাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার। তাদের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ বংশানুক্রমিকভাবে যেন সম্মানটা পায় সেই চেষ্টাটা করেছি। সেইসঙ্গে তাদের জীবনযাত্রা যেন ভালভাবে চলতে পারে সে চেষ্টা করেছি। আমরা যেন সকল রকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নত করে দিতে পারি।’

জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভাষণকে কেন্দ্র করেই মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে তুলে নেয় এবং যার যার যা আছে তাই নিয়ে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলে। এখন আর কেউ বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে দিতে পারবে না, এটাই সত্য।’

মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘চলতি অর্থবছর থেকে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধাকে পাঁচ হাজার টাকা করে বিজয় দিবস ভাতা এবং দুই হাজার টাকা নববর্ষ ভাতা দেওয়া হচ্ছে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শন্তিকালীন সাহসিকতাপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সেনাবাহিনীর নয়জন, নৌবাহিনীর একজন ও বিমানবাহিনীর তিনজনসহ ১৩ জনকে ‘শান্তিকালীন পদক ২০১৭’ দেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২৪নভেম্ববর-২০১৮ইং)

SHARE