ডেস্ক: ভোলানিউজ.কম,
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘নিউ ব্লাড’ দরকার উল্লেখ করে শতকরা ৮০ শতাংশ ‘অসৎ’ সংসদ সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুনদেরকে মনোনয়ন দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক-কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী।
রাজনৈতিক এই পর্যবেক্ষক বলছেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একমাত্র দল যাদেরকে ক্ষমতায় আনা যায়। কিন্ত আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিরা এলাকায় চাঁদাবাজি ও অসৎ কাজ করে দলের অর্জনকে নষ্ট করছে। তাই আওয়ামী লীগের প্রয়োজন নিউ ব্লাড।’
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের রচয়িতা ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী গাফফার চৌধুরী এখন বাংলাদেশে। রবিবার দুপুরে ঢাকার একাত্তর হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ -৩ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামকে পরিচিত করতেই এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় যাতে প্রধান অতিথি ছিলেন গাফফার।
২০১৪ সালের নির্বাচনে এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। সংসদ সদস্য হন লিয়াকত হোসেন খোকা। তবে আগামী নির্বাচনে এখানে নৌকা মার্কার প্রার্থী চান গাফফার চৌধুরী। আর তার পরামর্শ, নৌকা তুলে দেয়া হোক আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির শফিকুল ইসলামের হাতে।
আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ধরে আগাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর কাকে মনোনয়ন দিলে পাস করে আসা যাবে, সে বিষয়ে একাধিক জরিপ করিয়েছেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। আর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ‘আমলনামা’ তার কাছে আছে বলে একাধিকবার জানিয়েছেন তিনি।
যারা দুর্নীতি করেছেন, যারা খারাপ কাজ করেছেন, তারা কেউ মনোনয়ন পাবেন না বলে সম্প্রতি দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আর মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন কীভাবে হওয়া উচিত সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘আমি পরামর্শ দিতে পারি, কিন্তু আওয়ামী লীগ শুনবে কি না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। …গতকালও ঢাকা ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ মন্ত্রীদের বলেছি, আপনারা নতুনদের মনোনয়ন দিন।’
‘শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। তার নেতৃত্ব নতুনদের মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন করা উচিত। কারণ, বর্তমান এমমিরা এলাকায় জনপ্রিয় নন। তারা দলের মধ্যে অনেক গ্রুপ তৈরি করেছেন। চাঁদাবাজি করছেন।’
বিএনপিকে ভোটে আনার পরামর্শ
দশম সংসদ নির্বাচ বর্জনকারী আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে এবার ভোটে দেখতে চান গাফফার চৌধুরী। আর এর প্রয়োজনে দলের দণ্ডপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিশেষ ব্যবস্থায় ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়ার পক্ষে তিনি।
গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘শক্তিশালী বিরোধীদল ছাড়া গণতন্ত্র টেকসহ হয় না, তাই বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হবে।’
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। আর ওই নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তবে সেই ‘ফাঁদে’ এবার আর আওয়ামী লীগ পড়বে না বলে নিশ্চিত করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি এবারও ভোটে আসবে-এমন ঘোষণা আসেনি এখনও। যদিও দলের ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছ্নে, ভোট আসতে বিএনপির আগ্রহ আছে।
বিএনপি এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী। যদিও আওয়ামী লীগের আগ্রহ নেই। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কথা হতে পারে টেলিফোনে। আর জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফোন করতে হবে কাদেরকেই। আর কাদের বলেছেন, শর্ত দিলে তিনি ফোন দেবেন না।
আওয়ামী লীগ আগে ফোন দিয়ে সংলাপ করবে নাকি বিএনপি করবে এমন প্রশ্নও ছিল গাফফার চৌধুরীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যেভাবে কথা বলে মনে হয় তারাই ক্ষমতায় আছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসলে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ আর আওয়ামী লীগের মধ্যে।’
খালেদা জিয়াকে কীভাবে নির্বাচনে আনা যায়-এমন প্রশ্নে এই কলামিস্ট বলেন, ‘তাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে নির্বাচন করা যেতে পারে।
(আল-আমিন এম তাওহীদ, ২৯জুলাই-২০১৮ই)