।। তাইফুর সরোয়ার ।।
সময়টা ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট। নিরাপদ সড়কের দাবিতে উত্তাল ঢাকার রাজপথ। ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত ও ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের সহপাঠিদের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলন সাধারণ মানুষের মনে আশা জাগিয়েছিল, কুড়িয়েছিল বিপুল বাহবা। সড়ক ব্যবস্থাপনার নগ্ন চিত্র উন্মোচিত হয়েছে সবার সামনে। পুলিশের পোশাক পরা বাইকারের লাইসেন্স না থাকা, সরকারি গাড়ির ড্রাইভারের গাড়ির বৈধ কাগজ না থাকা—ইত্যাদি তখন শিক্ষার্থীরা সারাদেশের মানুষের সামনে উদোম করে দিয়েছিল। শিক্ষার্থীরা তখন রাস্তায় মোড়ে মোড়ে সাইনবোর্ডে লিখে দিয়েছিল—’রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’।
২০১৮ সালের ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ আশা জাগালেও আজও আমাদের সড়ক নিরাপদ হয়নি। তখনকার আশ্বাস বাস্তবায়ন হয়নি। থামেনি সড়কে মৃত্যুর মিছিল।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ২০১৯ সালে তিন হাজার ৯৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যায় ৪ হাজার ৩৫৮ জন, আহত হন ৭ হাজার ২৪০ জন। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩২ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।
আর কত প্রাণ ঝরলে – নিশ্চিত হবে নিরাপদ সড়ক, মানুষ পাবে স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা?