বিশেষ প্রতিনিধিঃ
এক এ করোনামহামারী তার উপর প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময় ভোলার সাংবাদিকরা এতটাই ইতিবাচক নিউজে নিজেকে উৎসর্গ করেন যে সকল বক্তব্য ভোলার কর্তাব্যক্তিদের তোষামোদে ভরা থাকে। ২ মিনিটের নিউজে আরো ২ মিনিট ধার করে নিয়ে ৪ মিনিট বানিয়ে অমুকে এটা করেছেন, তিনি বলেছেন, তিনি আরো বলেছেন, তিনি জোড়ছে বলেছেন, তিনি চিল্লাইয়া বলেছেন- এমন আরো কত কি! সদ্য তান্ডব চালানো আম্পান এর আগে বুলবুল- এই দুটো বিপর্যয় থেকে আল্লহর রহমতে ভোলাবাসী লটারীতে বেঁচে গেছেন। তা না হলে কত মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন আর কত মানুষকে বিচ্ছিন্ন চর থেকে উদ্ধার করে মূল ভুখন্ডের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে তার একটা সঠিব হিসেব পাওয়া যেতো। আমরা যাদের দালালী করে বললাম, আম্পানের তান্ডব থেকে বাঁচতে ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে, আমরা একবার খবরও নিলাম না কোন উপজেলায় কতজন এসেছে, কোন ইউনিয়নে কতজন এসেছে। ভোলা সদরের উত্তরের ৩৬ নং ধনিয়া প্রাথমিক বদ্যালয় ও মৌলভীর হাট মাদ্রাসার আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়া তেমন কোন আশ্রয় কেন্দ্র চোখে না পড়লেও সবাই নিয়মিত নিউজে বলছেন সাড়ে তিন লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। কেউ কেউ আবার ঝড়ের আগের দিন রাত থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার বিতরণের নিউজও দিয়েছেন। ২শ মেট্রিক টন চাল ও ৭ লক্ষ টাকা আম্পান উপলক্ষে বরাদ্দ হলেও আমরা এমন নিউজ দেখিয়েছি এবং করেছি যে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এবং খাবার এনে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে তারা দিয়েছেন। আমরা দালালীর এতোমাত্রা অতিক্রম করেছি যে কেউ কেউ তিনাদের দেয়া হিসেরের বাহিরে গিয়ে আশ্রিত মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ ছাড়িয়েছি। অতছো জেলা রেডক্রিসেন্ট এর চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু ও জেলা আওয়ামীলীগের সংঘঠনিক সম্পাদক মাইনুল হোসেন বিপ্লব ই ছুটে গিয়েছিলেন আশ্রয় নেয়াদের জন্য শুকনো খাবার ও করোনা থেকে বাচার উপকরন নিয়ে। কিন্তু তাদের কোন কথাই আমরা কেহই বল্লাম না। আর বলবো ই বা কেন তারাতো রাজনিতি করে ঠেকেছেন আমাদের জন্য নিয়মিত করেই যাবেন এটা তাদের কর্তব্য।
আমরা সাগর পারের সাংবাদিক, তাই আমাদের সাগরের মত উদার মন থেকে আশ্রিতের সংখ্যা ৪ লাখের আরো দ্বিগুন করে বলতে কোন কষ্ট হবার কথা নয়। তার পরেও পান থেকে চুন খসলেই এই সাংবাদিকদের উপরই খড়গ নেমে আসে। প্রথম সারির সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও বাঁচতে পারেন না ওই কর্তাব্যাক্তিদের ৫ শত টাকার জড়িমানা থেকে। এ ছাড়া আরো কত ক্ষমতা, ইখতিয়ারের ভয় আর হুমকিতো রয়েই গেছে। আম্পান এর আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার ব্যাপারে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ভোলা প্রতিনিধি সাংবাদিক নজরুল হক অনু সংবাদের লাইভে এসে বলেন, কাগজে কলমে সাড়ে ৩ লাখ লোক আশ্রয় কেন্দ্রে আসার কথা বলেও বাস্তবে তেমন কোন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসেন নি। এবং যারা এসেছেন তারা তেমন কোন খাবারও পাননি। এমনকি ঢালচর এবং চর পতিলা থেকে কোষ্টগার্ড ৫০ টি ট্রলারে উদ্ধার করে যাদের কচ্ছপীয়ায় এনেছেন আশ্রয় কেন্দ্রের পরিবেশ না থাকায় তারা তাদের আত্নীয়ের বাড়িতে আশ্রয়ে ছিলেন এবং তাদের অনেকে খাবার না পেয়ে পানি খেয়ে রোজা রেখেছেন। নজরুল হক আনুদের মত সাংবাদিকদের এসব নিউজ উপেক্ষা করেও আমরা যারা নিয়মিত তোষামোদিতে ব্যাস্ত তার পরেও কি তিনারা আমাদের উপর খুশি?