টিপু সুলতান %বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাবেক পানি সম্পদ ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ভোলার গণমানুষের নেতা মরহুম আলহাজ্ব মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের আজ ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী ।
তিনি ১৯৩৯ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর ভোলার ঐতিহ্যবাহী মিয়াঁ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ২০১২ সালের ৫ মে তিনি ঢাকা ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।
ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম জানান, মোশারেফ হোসেন শাহজাহান একটি নাম, একটি ইতিহাস। মোশারেফ হোসেন শাজাহানের মত রাজনীতিবিদ বর্তমান সমাজে বিরল। তিনি নিরঅহংকার ও মানবতাবাদি মানুষ ছিলেন। তিনি সব সময় সমাজের কল্যাণের কথা ভাবতেন। দল মতের ঊর্ধ্বে তিনি ভোলার মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতেন।সমাজের অবহেলিত মানুষের উন্নয়নের জন্য তিনি বন্ধুজনের মতো একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান করে কাজ করেছেন। তিনি ছিলেন ভোলার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের মধ্যে একজন।
তিনি আরও জানান, আমরা প্রতি বছরের মতো এবারো তার মৃত্যুবার্ষিকী নানা আয়োজনের মাধ্যমে করবো। সকালে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আলিয়া মাদ্রাসা জামে মসজিদে কোরআন খতম ও কবর জিয়ারত করা হবে। সকাল দশটায় জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে তার স্মৃতিচারণে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও ভিন্ন মসজিদে মিলাদ, দোয়া খতম করানো হবে।
মোশারেফ হোসেন শাহজাহান ভোলা থেকে মোট ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ১৯৯১ সালে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, ২০০১ সালে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহাজান ১৯৩৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভোলার ঐতিহ্যবাহী মিয়াঁ পরিবারে আলতাজের রহমান তালুকদার ও মাসুমা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহন করেন। ৩ ভাইয়ের মধ্যে তিনি প্রথম।
প্রথম জীবনে তিনি নাটক, সাংবাদিকতা, আবৃতি, ফটোগ্রাফিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। ছাত্রাবস্থায়ই রচনা করেন নাটক ‘নীর ভাঙ্গাঁ ঝড়’ সেই নাটকে তিনি নিজেও অভিনয় করেছেন। ভোলা থেকে পাকিস্তান আমলে ‘পাক্ষিক মেঘনা পত্রিকা’ প্রকাশ করেছিলেন। তার উদ্যোগে ১৯৬৮ সালে সর্ব প্রথম ভোলা প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় তিনি সেই প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালের তিনিই সর্বপ্রথম সাপ্তাহিক ভোলাবাণী প্রকাশের উদ্যোগ নেন। ১৯৬৫ সালে মাত্র সাড়ে ২৫ বছর বয়সে এমপি নির্বাচিত হয়ে সম্পৃক্ত হন রাজনীতির সাথে। মোশারফ হোসেন শাহজাহান ভোলার ১ম মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পর পরই মোশারফ হোসেন শাহজাহান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে তিনি বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া তাকে উপমন্ত্রীর মর্যাদায় বৃহত্তর বরিশালের জেলা উন্নয়ন সমন্বয়কারী মনোনীত করেন। ১৯৯১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রথম মন্ত্রিসভায় তাকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয় এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
উল্লেখ্য, মোশারফ হোসেন শাজাহান ফুসফুস ও শ্বাসকষ্টসহ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ৫ মে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী, ৩ মেয়ে, ১ ছেলে, ২ ভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান