ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার বোরহানউদ্দিনে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের বাটামারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
দু’পক্ষের মধ্যে একপক্ষ হলেন- ওই গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহীন। অপরপক্ষ হলেন- একই বাড়ির ইমন খান। তাঁরা উভয় পরস্পর আত্মীয়স্বজন।
দু’পক্ষের অভিযোগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইমনের বোন লাভলী আক্তার ঘটনার আগের দিন বিকেলে শাহীনকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। শাহীন এসব ভাষার প্রতিবাদ করলে লাভলী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচ্চস্বরে গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে শাহীন লাভলীকে উঠানে ডেকে নিয়ে চড়থাপ্পড় দেন।
এরপর ঘটনার দিন সকালে লাভলী, তার ভাই ইমন ও সোহাগসহ আরো ৫ থেকে ৭ জন একত্রিত হয়ে শাহীনকে বেধড়ক মারধর করেন। এসময় দেবরকে বাঁচাতে ভাবি আরজু বেগম এগিয়ে আসলে তাকেও এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। মাকে মারতে দেখে মেয়ে সুমাইয়া আক্তার এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তার উপরও হামলা চায়।
পরে স্থানীয়রা শাহীন ও আরজু বেগমকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। আহত লাভলী আক্তার ও ইমন বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
স্থানীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, ইমন, সোহাগ ও তাদের বোন লাভলী আক্তার সন্ত্রাসী টাইপের লোক। তাদের ভয়ে বাড়িতে বসবাস করা সবাই কোনঠাসা। তারা বাড়ির নারীদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে। আরজু বেগমের স্বামী কুয়েত প্রবাসী। সে সুযোগে লাভলী, ইমন ও সোহাগ প্রায়ই ওই নারীকে মিথ্যে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে আসছে। ইমন, সোহাগ ও লাভলী আক্তার বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা সৃষ্টি করে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
আহত শাহীন ও আরজু বেগম সাংবাদিকদের জানান, শাহীন ও তার বড় ভাই (আরজুর স্বামী) কুয়েত প্রবাসী। গেল কয়েকদিন আগে শাহীন প্রবাস থেকে বাড়িতে আসেন। এরমধ্যে সোহাগ শাহীনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার চেয়েছিলেন। কিন্তু, শাহীন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। শাহীন দাবি করছে, তাঁর উপর সোহাগ, ইমন ও লাভলী গংরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক নারী জানান, সোহাগ এবং ইমন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। বাড়িতে কোনো ঝগড়াবিবাদ হলে তাঁরা সন্ত্রাসী তান্ডব শুরু করে।
সরেজমিন বাটামারা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সোহাগ, ইমন ও লাভলী গংরা বেপরোয়া। উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনেও তাদেরকে মারমুখী ভঙ্গিতে দেখা গেছে।
সোহাগ ও ইমনের দাবি, শাহীন তাদের বোনকে চড়থাপ্পড় দেওয়ার কারনে তাঁরা শাহীনের উপর হামলা চালায়। তখন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় দু’পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়।
এদিকে মূল ঘটনা আড়াল করতে লাভলী আক্তার বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা অবস্থায় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে আরজু বেগমের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ টেনে মিথ্যা বক্তব্য দেন। একটি সূত্র বলছে, লাভলী আক্তার চতুর প্রকৃতির লোক। মূল ঘটনা আড়াল করতে তিনি আরজু বেগমের বিরুদ্ধে পরকীয়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। স্থানীয়রা এর নিন্দাও জানিয়েছেন।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো পক্ষই কোনো ধরনের অভিযোগ দেয়নি।
ভোলা নিউজ / টিপু সুলতান
মন্তব্য করুন